
আবরার লিসান, নোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
বাবা হারানো কামরুলের এতোদিনের পরিশ্রম ও লালন করা স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে বসেও গুচ্ছ প্রশাসনের পরিক্ষার প্রশ্নে ত্রুটির কারনে স্বপ্নভঙ্গ। নির্ধারিত ১ ঘন্টা সে পরিক্ষা দিতে পারেনি । ৩০ মিনিটেই নির্ধারিত হলো তার স্বপ্ন। চট্টগ্রামের স্বন্দীপ উপজেলা থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থী কামরুলের চোখেমুখে কান্নার ছাপ।
২৭ মে, শনিবার দুপুর ১২টা থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) তে শুরু হয় গুচ্ছ পদ্বতির ২০২২-২৩ সেশনের ‘ সি ‘ ইউনিটের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে ঘটে এই ঘটনা।
জানা যায়, প্রথম ৪৫ মিনিট পরীক্ষা দেওয়ার পর প্রশ্নপত্র ভুলের কারনে দায়িত্বরত শিক্ষকরা নতুন করে ওএমআর সহ প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে দেন। এতে নির্ধারিত ১৫ মিনিট সহ মাত্র অতিরিক্ত ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দেওয়ার কারনে অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রস্তুতি থাকা সত্বেও উত্তরপত্র পূরণ করতে ব্যার্থ হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কামরুলের মাধ্যমে জানা যায়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন – ২ এর ২০১ নাম্বার রুমে গুচ্ছ পদ্ধতির সি ইউনিটের প্রশ্নে প্রথম পাতায় ২ নাম্বার সেটের ৫০ টা প্রশ্ন অপর পাতায় ৩ নাম্বার সেটের ৫০ টা প্রশ্ন ছিল, এমতাবস্থায় দায়িত্বরত শিক্ষকরা প্রথমে উত্তরপত্রে লিখতে বলায় টানা ৪৫ মিনিট ভরাট করার পর, যখন প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র পরিবর্তন করে ঘড়ির কাঁটায় তখন ১৫ মিনিট বাকি, পরবর্তীতে আর মাত্র ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দিয়ে পরীক্ষা শেষ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থী জানান, উত্তর জানা থাকা সত্বেও ৩০ মিনিটে সব উত্তর ভরাট করা সম্ভব হয়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কামরুল জানান, ” আমার বাবা নেই, মায়ের উৎসাহে আমি এই পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে আসছি। গত ৫ মাস ধরে একা একা মেসে থেকে রাতদিন অধ্যয়ন করেছি। আজকে গুচ্ছের অবহেলা এবং প্রশ্নপত্র ভুলের কারনে ৩০ মিনিটে আমার পরীক্ষা দিতে হয়েছে। প্রথমে প্রশ্নে ভুল থাকার কারনে আমি ৪৫ মিনিট ভুল প্রশ্নের বৃত্ত ভরাট করেছি। পরে আমাকে নতুন উত্তরপত্রের জন্য মাত্র ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এভাবে স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে আমি কখনো ভাবিনি।
প্রশ্নপত্রের এমন সমস্যার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নোবিপ্রবি ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এসএম মাহবুবুর রহমান জানান, প্রশ্ন পরীক্ষার অল্প সময় আগে কেন্দ্রে পৌঁছে। এখানে আমাদের কোনো গাফলতি ছিল না। গুচ্ছ পদ্ধতির কারণে প্রশ্ন বিষয়ে সবকিছু তারাই দেখাশোনা করে। তারপর আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব করার চেষ্টা করেছি।