
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
চাকরি না পাওয়ার হতাশায় ফেসবুক লাইভে নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলা ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের একটি প্রকল্পে ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি পেয়েছেন। চাকরি পাওয়ার পর ফেসবুক লাইভে এসে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো নিয়ে আশার বাণী শোনালেন তিনি।
সোমবার (২৯ মে) মুক্তা সুলতানা তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, গত ৫ দিন আগে আমার সার্টিফিকেট পোড়ানোর ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যোগাযোগ করে আমাকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠিয়েছেন। এখানে এসে আমি একটি ভিডিও করেছি।
তিনি বলেন, ভিডিও বার্তায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি আমি বলেছি। ভিডিওটি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। খুব দ্রুতই আমরা হয়তো ইতিবাচক সংবাদ পাবো।
লাইভে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ভিডিও বার্তাটি পৌঁছেছে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজেও আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি নিজে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। এরই মধ্যে বয়স বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে অনেক বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেকেই এই বিষয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক কথা বলেছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগেই হয়তো আমরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত জানতে পারবো।
লাইভের পর আরেকটি স্ট্যাটাস দেন মুক্তা সুলতানা। সেখানে তিনি লেখেন, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক স্যারের সামনেই আমি লাইভে বলেছি যে আমি বয়সসীমা বৃদ্ধির পক্ষে কাজ করে যাব। তারপরও এত বিভ্রান্তি সৃষ্টি কেন করা হচ্ছে আমি বুঝতে পারছিনা। সার্টিফিকেট যখন পুড়িয়েছি, আমি ব্যক্তি পুড়িয়েছি। ব্যক্তি আমার সঙ্গে যখন সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে, আমি ব্যক্তিই সাক্ষাত করেছি। কারও সঙ্গে কথা বলতে হবে প্রয়োজনীয়তা মনে করিনি।
তিনি আরও লিখেন, পলক স্যারের সঙ্গে আমি প্রায় ২ ঘণ্টা কথা বলেছি, বয়সসীমা বৃদ্ধি প্রসঙ্গেই যাবতীয় আলোচনা হয়েছে। তিনি আমার বয়সসীমা বৃদ্ধির যুক্তিগুলো শুনে বয়সসীমা বৃদ্ধির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। তার ফোন দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ভিডিও বার্তা তার (স্যারের) অডিও বার্তা সংযুক্ত করে পৌঁছে দিয়েছেন এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে ক্যাবিনেটে আলোচনা করবেন পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বয়সসীমা বৃদ্ধির ব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন বলে কথা দিয়েছেন।
সঙ্গে সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পক্ষে যুক্তিগুলো তাকে (স্যারকে) হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলেছেন। এবং আইসিটি ডিপার্ট্মেন্টের লাইভ ভিডিওতে আমি বিষয়টা পরিস্কার করেছি।
কিন্তু আমার সত্যিই কষ্ট লাগছে, দাবির পক্ষে থাকার পরও যখন আমাকে নিয়ে নেগেটিভ কথা বলা হচ্ছে। আমার মনে হয় আমার একটা রুটি রুজির ব্যবস্থা হয়েছে সেটা অনেকেই পছন্দ করছেন না। ক্ষুধার্ত পেটে থাকলেই হয়তো অনেকেই বেশি খুশি হতেন। এটাই বুঝতে পারলাম, কলিজা রান্না করে খাওয়ালেও বলবেন লবণ হয়নি। আজকে আমার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশ করলেন।
উল্লেখ্য, ফেসবুক লাইভে এসে নিজের সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন ইডেন কলেজের ছাত্রী মুক্তা সুলতানা। বিষয়টি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ জানান।
মুক্তা সুলতানার সঙ্গে আলোচনার পর প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। তার বেতন ৩৫ হাজার টাকা।