অনলাইন সংযোগঃ
রংপুরের তারাগঞ্জে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর স্বামী হাশমত আলী ও শাশুড়ি জরিনা বেগমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ মে) দিবাগত রাতে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কাঠগাড়ি গ্রামের আলম মিয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয় তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের খিয়ারচড়া গ্রামের হাসান আলীর ছেলে হাশমত আলীর (৩০)। বিয়ের পর তাদের সংসারে মেয়ে হাসফি খাতুন (৪) ও ছেলে আরমান হোসেন (৩) জন্ম হয়। আমেনা বেগম চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাই কাজ কাম একটু ধীরে করতেন। গত ৫ মে সকাল ৭টার দিকে রান্নার কাজ নিয়ে আমেনার সঙ্গে শাশুড়ি জরিনা বেগমের ঝগড়া হয়।
ওই দিন রাত ৯টার দিকে আমেনার স্বামী হাশমত আলী বাড়িতে এসে তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে আমেনাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করেন। এ সময় শাশুড়ি জরিনা বেগম, দেবর জুয়েল রানা, সোহেল রানাও কিল ঘুষি ও পেটে লাথি মারেন। এতে আমেনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
পরদিন ৬ মে সকাল আমেনার পেটে ব্যথা ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা সংকটাপন্ন দেখলে চিকিৎসকেরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) পাঠান। ৮ মে দিবাগত রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমেনা রমেক হাসপাতালে মারা যান।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ মে) দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর মা ছামিতন বেগম বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় হাশমত আলী, জরিনা বেগম (৪৭), জুয়েল রানা, সোহেল রানাসহ পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
নিহত আমেনার ভাই আবু সাঈদ বলেন, বিয়ের পর আমার বোনকে প্রায়ই নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কারণে অকারণে মারপিট করত। গত শুক্রবার বিনা কারণে আমার বোনকে হাশমত আলী ও তার মা-ভাইয়েরা মারধর করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় আমার বোন না ফেরার দেশে চলে গেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আমেনার মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।