
আবির হোসেন সজল, লালমনিরহাট :
লালমনিরহাটে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতন ও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ নুর আলমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।
রবিবার (৯ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান এ রায় দেন। একই মামলায় আরও চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নুর আলমের প্রথম স্ত্রী রোপিতা বেগম, শ্যালক মিন্টু ওরফে মিঠু ও মোঃ বেলাল ওরফে বেল্লাল এবং শাশুড়ী মোছাঃ বেগম। দণ্ড পাওয়া হাজতী আসামী মোঃ নুর আলম লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার চর সিন্দুর্না এলাকার মৃত একাব্বর আলীর পুত্র।
বাদী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি নুর আলম নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার কেওডালা শ্রীরামপুর এলাকায় একটি ইটভাটায় কাজ করত। সেখানে সবুজা বেগম ও তার পরিবারের সাথে পরিচয় হয়। নুর আলম পূর্ব স্ত্রী ও সন্তান কথা গোপন রেখে সবুজা বেগমকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে। করোনাকালে নুর আলম সবুজা বেগমকে নিয়ে তার গ্রাম চর সিন্দুর্ণা সাকিনের বাড়ি ফিরে আসলে বাঁধে বিপত্তি।
গত ২০২০ সালের (২১ মে) সকালে জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে সবুজা বেগমের মা ছকিনা বেগম জানতে পারে যে তার মেয়ে মারা গেছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের শরিরের বিভিন্ন স্থানে জখম দেখতে পেয়ে হাতিবান্ধা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছকিনা বেগম। যা তদন্তের দায়িত্ব পালন করে হাতিবান্ধা থানার তৎকালীন এস আই আবু বক্কর সিদ্দিক। তদন্তে বাদী ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ১৬১ ধারায় রেকর্ড করেন।
আসামি নুর আলম ও মোছাঃ বেগমকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামি নুর আলম হত্যার কথা স্বীকার করে যা স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি রেকর্ড করানোর জন্য আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে গত ২৫ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে আদালতে অভিযোগ দাখিল করে। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে নুর আলমের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো একবছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। আর বাকি ৪ আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত খালাস প্রদান করে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ আকমল হোসেন আহমেদ বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত নুরআলমকে এই সাজা দেন। এবং অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিদের খালাস দিয়েছেন।